শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ! টাকার বিনিময়ে বিদ্যুতের তার খাম্বা মিটার এনে দেন ইলেকট্রিশিয়ান জুলিয়ান! নবান্ন উৎসব ঘিরে জমে উঠেছে কালাইয়ে মাছের মেলা কটিয়াদীতে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের সম্বর্ধনা জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত না-হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকতে হবে: রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু
রক্তে লাল সবুজের পতাকা

রক্তে লাল সবুজের পতাকা

 

বি. এ পরিক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে, কয়েক দিন হলো। কাদের ফাস্ট ক্লাস থার্ড হয়েছে। খুব ভালো ছাত্র ছিল আমার ভাইর বেটা। বলতে বলতে দাদি কেঁদে দিল। দাদি তুমি কাঁদছ কেনো?তারপর কী হলো দাদি? আঁচল দিয়ে চোখ মোচতে মোচতে।

তখনও সব জায়গায় যুদ্ধ শুরু হয় নাই। তবে, অনেক পূর্বে গ্রাম-গঞ্জে মিলিটারি ঢুকেছে। মিলিটারিরা আড়িয়ালখাঁ নদীর পাড়ের স্কুলে ক্যাম্প করছে। যখন মিলিটারি গ্রামের মাঝে হাঁটতসব থর থর করে কাঁপত। এমন কী মাটিও।

একঝাঁক শকুন গাছের কোন ডালের উপর বসলে, গাছটা যেমন ভাবে কেঁপে ওঠবে, ঠিক

তেমনিই কাঁপত। একবার গ্রামে মিলিটারি ঢুকল। গ্রামে ঢুকে সব ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে ছনের ঘরগুলো। গ্রামের কোথায়ও কোনোআর্তনাদের শব্দ নেই।

নেই, চিৎকার রাহাজানির শব্দ। কোথায় কোনো সাড়া শব্দ নেই। কারন, পুরো গ্রাম ফাঁকা।

গ্রামে মিলিটারি ঢুকছে, এ খবর শুনে সবাই যার যার মতো দৌঁড়ে পালাচ্ছে।

কিন্তু কাদের পালায়নি। কাদের মেইন রোড ধরে, গ্রামের দিকে আসছিল। এমন সময় কাদের দেখল, সবাই দৌঁড়াচ্ছে। গ্রাম থেকে সবাই পালাচ্ছে। কাদের বলছে, তোমরা কোথায় যাচ্ছ? লাঠিভর করে হাঁটা এক বৃদ্ধ

 

কাঁপা কাঁপা কন্ঠে, বাবা কাদের গ্রাম্মে মিলিটারি আইতেছে, পলাও… তুমিও পলাও। এক বৃদ্ধা, কাদেরে মোরা হগলে ইন্দিয়া যামু। তুইও লহ। কাদের চিৎকার করে বলছে, না, তোমরা কেউপালাবে না! এ দেশ আমাদের। আমাদের সকলের।এ দেশে আমরা থাকব।

এ দেশ থেকে আমরা পালাবো না। পালাবে ঐ বিদেশী দস্যু। এ দেশ আমরা মুক্ত করব। এ দেশ আমরা স্বাধীন করব। তোমরা কেউ পালাবে না। দাদি তারপর… বুকেরভিতর জমানো অনেক কষ্টে প্রকাশ করল তারপর…….? দাদির চোখ থেকে গাল বেয়ে বেয়ে টপটপ করে কিছু কষ্ট, বাস্প আকারে বের হচ্ছে

আর বলছে, কাদেরের কথা কেউ শুনলো না, সবাই পালিয়ে গেলো। কাদেরের চারদিকে নিস্তুপ। কোথায়ও কোনো সাড়া শব্দ নেই। মাটি ফাঁটা রৌদ্রে প্রতিদিন গ্রামের মাঝে একটা কুকুরের আর্তনাদেরচিৎকার শোনা যেত কিন্তু আজকে সেটাও নেই।

কাদের রাস্তাপাড় হয়ে, মাঠের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। মাঠের মধ্যে ছিল

বড় বড় সবুজ ঘাস। মনেহয়, চারদিকে সবুজে মুখরিত করে রেখেছিল সেদিন। হঠাৎ কাদের শোনতে পেল, তার পিছনের দিকে থেকে একঝাঁক মাছি উঁড়ে আসছে। কাদের মনে মনে বলছে, এদেশ আল্লার রহমাতে স্বাধীন হবেই। এ দেশে লাল সবুজের পতাকা উড়বেই। এ দেশ যখন স্বাধীন হবে,তখন সবাই কন্ঠে তাল

মিলিয়ে গাইবে….

.

উড়িতেছে দেখ বাংলার শান্ত সমীরে

লাল সবুজের পতাকা

এ দেশ থেকে তাড়িয়েছি মোরা

পাকদের ঘাড় ধরিয়া

কাদের বলছে, এ দেশ স্বাধীন করব, আমার জীবন দিয়ে হলেও। এ দেশে লাল সবুজের পতাকা উড়ব আমার রক্ত দিয়ে হলেও। বলার সাথে সাথে,  মিলিটারিদের ছোঁড়া একঝাঁক বুলেট, যাকাদের মাছি ভেবেছিল, তার পিঠের মধ্যে ঢুকে বুক ছিঁড়ে বের হয়ে যায়।

 

কাদের মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কাদেরের রক্তে রঞ্জিত হয় সবুজের মাঠ। কাদের শহীদ হয়। কাদেরের শহিদী আত্মা চিৎকার করে বলছে, দেখো আমার রক্তে সবুজের মাঠে লাল সবুজেরপতাকা উড়ছে।

 


Inline image 1
লেখক: শিস তায়েব (দাদু মিয়া)           

নটর ডেম কলেজ, ঢাকা                     

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com